নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার ১০ বছরে শতকোটি টাকার মালিক হলেও রাজপথে দেখা মিলছেনা জসিম উদ্দিনের। দলীয় কোনো কর্মসূচীতে অংশ গ্রহন করতে দেখা না গেলেও সরকারী দপ্তরগুলোতে এবং প্রভাবশালী মন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ে ছাত্রলীগ সভাপতির বরাদ দিয়ে তার অবাদ বিচারন ও দাপটের কমতি নেই। সংগঠনের সাধারন সম্পাদক অসিম দেওয়ান দীর্ঘদিন ধরে বরিশালে অবস্থান করছেন না। নারী কেলেংকারীর ঘটনায় কারাবরণ করায় সাধারন সম্পাদকের পদ থেকে অসিম দেওয়ানকে বহিস্কার করা হয়, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌছিক আহম্মেদ রাহাত কয়েকবছর পূর্বে মহানগর ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী নিয়েছেন। এছাড়াও ঐ কমিটির অন্যান্য বেশিরভাগ সদস্যরা রাজনীতি থেকে অনেকটা দুরে চলে গিয়েছেন। কয়েক বছর যাবত বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কার্যক্রম আদৌ নেই। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্রলীগ সমর্থকরা বরিশালে দলীয় কর্মসূচীতে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে যুক্ত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি করছে। জানা গেছে, ২০১১ সালে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়, প্রয়াত মেয়র শওকত হোসেন হিরন এর আমলে ঠিকাদারী কাজ, সরকারী জমি লিজ নেয়া, জমি জমা দ্বন্দ্বের বিচার শালিশী এবং বিভিন্ন মামলার তদবির করে অর্থ আয়ের পাশাপাশি ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতেন। তখন তাদেরকে দলীয় কর্মসূচীতে নেতার আশপাশে দেখা যেত। উল্লেখিত সেক্টরগুলাতে সরকারের কঠোর নির্দেশনা থাকায় অনেকই ছাত্রলীগের নেতৃত্ব থেকে সরে গিয়ে নিজের গোছানো আখের সামলাতে অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন। মহানগর সভাপতি জসিম উদ্দিন বিপুল পরিমান অর্থ সম্পদের মালিক হয়েছেন। বরিশাল নগরীর জর্ডান রোড ও ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট বাড়ি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখে বহুতল ভবন, শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সেতু সংলগ্ন সড়কে জেলা পরিষদের বিপুল সম্পত্তি লিজসহ বরিশাল নগরীতে বিভিন্ন স্থানে জমি ও বাড়ি করেছেন। বর্তমানে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে দেখা যায়না। বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগ সভাপতির পদে থেকে দলীয় কর্মসূচীতে মাঠে অংশগ্রহন না করে নানান উছিলায় নিজের সম্পদ করতে নিজেকে আড়াল করে রেখেছেন। ঢাকায় থেকে বড় মাপের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রেখে বাড়তি আয়ের চেষ্টায় নিজেকে ব্যস্ত রাখছেন। মাঝে মধ্যে বরিশালে আসলেও ২/১ নেতার কাছে থেকে ফটো সেশনে অংশ গ্রহন করে আবার ঢাকায় চলে যান। ফলে মহানগর ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ন পদে থাকা সভাপতি সম্পাদক, ও সাংগঠনিক সম্পাদক, রাজনীতির বাইরে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে আরাম আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন। এদিকে নগর ছাত্রলীগকে শক্তিশালী করতে রাজনৈতিক কোনো কর্মকান্ড দেখা যাচ্ছেনা। রাজপথে যারা কর্মসূচীতে অংশ গ্রহন করছেন তাদের সাংগঠনিক পদ-পদবী না থাকায় বা কমিটি না হওয়ায় ক্রমেই দুর্বল হয়ে পরেছে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের রাজনীতি। পাশাপাশি প্রতিপক্ষ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মহানগরের ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটি গঠন করে নগরীতে ছাত্রদলকে শক্তিশালী করছেন।
Leave a Reply